Saturday, March 14, 2015

নীলক্ষেত যাচ্ছি EMBA র বাসে করে

আরো কিছু বই কিনতে নীলক্ষেত যাচ্ছি EMBA র বাসে করে। বিজনেস ফ্যাকাল্টির সামনে থেকে উঠে একতলা BRTC র লাল বাসটিতে গাদাগাদি করে দাড়িয়ে যাবার মধ্যেও কোন ক্লান্তি অনুভূত হচ্ছিলো না। তার নিদৃষ্ট কারণও অাছে।

৫২ সিটে ৫২ জন আর আমার মতো দাড়িয়ে আরো ১৫-১৭ জন। তাদের মধ্যে সামনের সিটে বসে আছে এই মাত্র আমাদের ক্লাস নিয়ে বের হওয়া Fundamental of Management Science সাবজেক্টের কোর্স টিচার। অন্য সিটে বসে থাকা কয়েকজনের মাথায় চুলের পরিমান কম থাকায় ধারনা করেছিলাম তারাও হয়তো কোন সাবজেক্টের গেস্ট টিচার। শিক্ষাদান শেষে ক্লান্ত মনে বাসায় ফিরছেন।

EMBA করতে আসা বিিভন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকুরিরত ও চাকুরিপ্রার্থী ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে ভ্রমনে যথেষ্ট নিরবতা আশা করেছিলাম।
কিন্তু বাস ছাড়ার কিছুক্ষন পর আমার সকল ধারনা মিথ্যা প্রমান করে সাদা শার্ট ও জিন্সের প্যান্ট পরা, ডান হাতে স্টীলের ব্রাসেলট এবং চোখের কালো সানগ্লাস দ্বারা মাথার সামনের অংশের টাক ঢাকা এক বড় ভাই মনের সুখে আপন মুখে বাসের মধ্যে গান শুরু করে দিলো। মুহূর্তেই তার সাথে যোগ দিলো প্রায় একই অবস্থা সম্পন্ন অল্পদিনের পরিচিত বন্ধুরা। একে একে অনেকেই নিজেদের সিট থেকে উঠে গিয়ে রীতিমতো বাসের মধ্যে ড্যান্স দেবার উপক্রম। সুন্দরী কিছু বড় আপুরা চুপটি মেরে বসে বসে মুচকি হাসি হাসছে। সামনের ছিটগুলোতে যারা বসে ছিলো তারা হয়তো যোগদান করতে না পারে আফসোস করছে।


ছাত্র জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে এত শত চিন্তা মাথায় নিয়ে তাদের কাছ থেকে এমন আনন্দ আশা করা প্রায় অসম্ভব। কিন্তু জীবন যত কঠিনই হোক আর বয়স যত বেশিই হোক, সুযোগ পেলেই সে তার বাল্যবস্থায় ফিরে যেতে চায়। কিছুক্ষনের জন্য ভুলে যেতে চায় স্থান, কাল ও পাত্রের ভেদাভেদ। লুটে নিতে চায় সামনে উপস্থিত মজা গুলোকে।

তো তাদের মজা করার সীমা যখন ধীরে ধীরে বাসের পিছনের অংশ হতে সামনের অংশে আসতে শুরু করলো, আর তাদের দলে লোকের সংখ্যা যখন আরো বেড়ে গেলো, সামনের ছিটে বসে থাকা মাথায় চুল নেই দেখে যাকে স্যার ভেবে গুটিসুটি হয়ে দাড়িয়ে ছিলাম সেও যখন ফূর্তিতে যোগ দিলো, তখন বুঝলাম ছাত্রদের পক্ষেও টাক হওয়া অসম্ভব কিছু নয়।
বয়স বয়সের জায়গায়, আনন্দ আনন্দের জায়গায়। দুটোকে একসাথ না করাই ভালো।

নিউমার্কেটের সমনে চলে আসায় বাস থেকে নেমে চলছি নীলক্ষেতের দিকে.....

No comments:

Post a Comment