Friday, December 18, 2015

লটারি। একদিনে তিনটা পুরস্কার।

জীবনে বহুত টিকিট কেটেছিলাম। কিন্তু কোনদিন কিছু পাই নাই। বহুত বললে ভুলই হবে। বাধ্যতা মূলক ভাবে যা কিনেছি আরকি।
সে যাই হোক। 

এবার ক্যারিয়ার ক্লাবের একজন সৌভাগ্যবান সদস্য হিসাবে গিয়েছিলাম গাজিপুর সাফারি পার্কের পিকনিকে। বাসে যাবার সময় কোষাধ্যক্ষ মেহেদি ভাই কোষ বৃদ্ধি করার জন্য সবার কাছে লটারির টিকিট বিক্রি করছে বড় পুরস্কারের লোভ দেখিয়ে। প্রতি টিকিট ১০ টাকা। তাও আবার কমপক্ষে ২ টা কেনা বাধ্যতামূলক।

কি আর করা। বাধ্য হয়েই ২টা কিনলাম। মনে হচ্ছিলো না কেনাটাই বুঝি সার্থকতা। আমার নাম্বার গুলো ১০৬ আর ১০৭। নিয়ে পকেটে রেখে দিলাম। জানি আগের মতোই কপালে কিছু নাই। তাই আগ্রহ কম।

সারাদিন ভরপুর ঘুরে মজামাস্তি করে শেষ বিকেলে ফেরার জন্য বাসে উঠলাম। বাস ছাড়ার কিছুক্ষন পর লটারির ড্র। শেষ দিকের প্রথম ৬ জনকে ৬ টা চকলেট সান্ত্বনা পুরস্কার দেওয়া হলো। এরপর ১২ থেকে শুরু করে ১ পর্যন্ত ডাকা হলো। ৫ নাম্বারে যে কুপন টা উঠালো সেটা ১০৬ নাম্বার। তার মানে আমার। জীবনে এই প্রথম কোন পিকনিকের লটারিতে কিছু পেলাম। পুরস্কার টা ছিলো একটা বডি স্প্রে। টোকেন উঠানোর আগে পুরস্কারের নাম সহ উপকারিতা বর্ননা করা হলো। সেই সাথে এও ঘোষনা করা হলো যে, যার ভাগ্যে এই পুরস্কার আছে, তারই বুঝি এটা সবচেয়ে বেশি দরকার। 
আমার ভাগ্যেই পড়লো। আলহামদুলিল্লাহ। অবশ্যই দরকার ছিলো। মিলেও গেল। grin emoticon

৪ নাম্বার লটারির পুরস্কার কে যেন পেল। মনে নেই। ৩ নাম্বার পুরস্কার একটা সুন্দর প্যাড। এবারো ঘোষনা করা হলো যে বেশি লেখালেখি করে তার ভাগ্যেই এটা আছে। উঠলো ১০৭। এটাও আমার। অন্যদের চেয়ে বেশি আশ্চর্য আমি। কারন আমি এখন একসাথে এরকম দুটো পুরস্কারের মালিক। ক্যামনে কি। ওয়াও। লুল। লুল ইন মাইন্ড ফুল অন ফেস। grin emoticon

আসলে এটাও আমার দরকার ছিলো। grin emoticon লেখি তো আর কম না। unsure emoticon
এই সময় মনে হচ্ছিলো শালার তখন কেন যে আরো কয়েটা টিকিট কিনলাম না। দুইটা কিনছিলাম দুইটাই পাইছি। ভাগ্যের প্রতি বিশ্বাস আমার বেড়ে গেছে। এরপর যতোগুলো পুরস্কার ততোগুলোই কিনবো। confused emoticon (অসম্ভব)

এতে গেল টাকা দিয়ে কেনা লটারির কাহিনী। ফ্রী লটারিতে কিছু না পেলে 'সুন্দর ভাগ্যের' সন্মান থাকার কথা না।

ফান বক্সে কতো রকমের ঢংয়ের কাহিনী। কাগজে লেখা নির্দেশ যার হাতে যেটা উঠবে তার সেটা পালন করতে হবে। এর মধ্যে আছে গান, ছড়া, প্রশ্ন, মনের কথার বহিপ্রকাশ.....। এদের মধ্যে আবার তিনজন পাবেন পুরস্কার। যাদের হাতে ড্যান্স করার আদেশ সূচক লটারি উঠবে। ২য় টা পেলাম আমি। একটা ডাভ শ্যাম্পু। মিনিপ্যাক। heart emoticon

এখন নাচতে হবে। এদেশের রাস্তায় চলন্ত বাসের ভিতর দাড়িয়ে থাকলে নাচার জন্য কষ্ট করতে হয় না। বাসের সাথে তাল মিলালেই হয়। তারপরেও আমার সাথে যায় না। ছোট ভাইগুলারে বললাম গান ধরতে। সেই সাথে কয়েকটা ঝাকি ঝুকি দিয়ে পার পেলাম। কি সাংঘাতিক রে বাবা.!.!.!.!.
এতগুলো লোকের মাঝে একাই তিনটা পুরস্কার। ভালোই তো। মনে হচ্ছে কপাল খুলে গেছে। আবার মনে হচ্ছে কে যেন বলছে, "এটা হচ্ছে মরার আগে শেষ সুযোগ। ভালো হয়ে যা। দেখলি তো? সৌভাগ্য তোর সাথেই আছে।"
।।
ধন্যবাদ, পেসিডেন্ট মাসুদ রেজা ভাই। ফিনানশিয়াল সেক্রেটারি মেহেদি ভাই। জেনারেল সেক্রেটারি নাইম ভাই।
আরো ধন্যবাদ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যারিয়ার ক্লাবের সকল সদস্যদের।

একটি মাকাল ফল

আমি তখন ডুবে গিয়েছিলাম। অন্ধকারের অনেক গভীরে। আলো থেকে বহু দূরে। ইচ্ছা করলেই আলোতে আসতে পারতাম। কিন্তু তাতে কোন শক্তি ছিলোনা।
.
কোন নির্দিষ্ট দিন নয়, রাত নয়, সময় নয়। 
কোন মাস বা বছর ও তো নয়।
কোথায়, কিভাবে, কেন, কি হয়েছিলো তাও জানা নাই। 
কোন হতাশা বা কোন ভয়। 
না।
তাও নয়।
কোন কিছু হারানোর ভয়। কারো উপর রাগ। মন খারাপ।
কিছুই তো মিলছে না।
কোন অপরাধবোধ, দায়িত্বহীনতা, অকৃতজ্ঞতা বা কোন অসন্মান।
তেমন কিছুও তে নয়।
আবার মনে হয় সব মিলিয়েই কোন কিছু।
কিছু না কিছু।
.
কিসের প্রভাব, কার প্রভাব, ক্যামনে কি।
.
বারবার শুধু ৮-৯ বছর আগের সেই মাকাল ফলের কথা মনে পড়ে। দাদুবাড়ি বেড়াতে গেলে একটা ছেলের কাছে দেখেছিলাম। জীবনে ওই একবারই। ছোটবেলায় কোন কবিতায় পড়া সেই মাকাল ফলের প্রতি আমার অতি মাত্রায় আগ্রহ দেখে ছেলেটি আমায় মাকাল ফলটি দিয়ে দেয়। টমেটো সাইজের অত্যন্ত সুন্দর সেই ফলটি আমার হাতে দেবার সময় ছেলেটি বলেছিলো সাবধানে রাখতে। ফেটে গেলে তার অন্তরে থাকা বিশ্রী গন্ধ চারদিকে ছড়িয়ে পড়বে। যা অসহ্য।
.
বাড়ি ফেরার সময় সুযোগ থাকলে বাসের সাদে উঠিই। সেবারও তাই। বাসের ছাদে বসে আখ খাওয়ার মজা আলাদা। কোন এক বাস স্ট্যান্ডে থামলে ছাদে বসেই আখ কিনতে গিয়ে মাকাল ফলটি হাত থেকে গড়িয়ে পড়ে যায়। ততক্ষনে বাস চলতে শুরু করে। 
তার পর থেকে আর কখনই মাকাল ফল দেখিনি।
.
কিন্তু কিছু মানুষের মাঝে মাকাল ফলের স্বরুপ দেখতে পাই। যারা আশেপাশেই থাকে। 
সব সময়। 
সবখানে।
সব অবস্থায়।
অন্যকেও প্রভাবিত করে।
.
দূর্ভাগ্য যে আয়নাতেও একটা জলজ্যান্ত মাকাল ফল দেখা যায়। দেখার মতো করে দেখলেই দেখা যায়। অবিকল মানুষের মতো দেখতে বড় একটা মাকাল ফল।।
.
আয়নায় মাকাল ফল দেখলে একা থাকতে হয়। নিজেকে গুটিয়ে নিতে হয়। সবার থেকে দূরে সরে থাকতে হয়। না জানি কখন ফেটে যায়।।